রবিবার, ০৫ মে ২০২৪, ০৩:২০ অপরাহ্ন

অশীতিপর বৃদ্ধা রাবেয়ার অস্ত্র মামলা বাতিল করলো হাইকোর্ট

অশীতিপর বৃদ্ধা রাবেয়ার অস্ত্র মামলা বাতিল করলো হাইকোর্ট

স্বদেশ ডেস্ক:

৮ বছর আগে অস্ত্র ও গুলি উদ্ধারের ঘটনায় ২০০২ সালের তেজগাঁও থানার অশীতিপর রাবেয়া খাতুনের বিরুদ্ধে করা এক অস্ত্র মামলা থেকে অব্যাহতি দিয়ে রায় ঘোষণা করেছেন হাইকোর্ট। এর ফলে তার বিরুদ্ধে আর মামলাটি থাকলো না পুরোপুরি বাতিল হয়ে গেলো বলে আইনজীবীরা জানিয়েছেণ।

আজ বুধবার (৩০ অক্টোবর) হাইকোর্টের বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম ও বিচারপতি মো. রিয়াজ উদ্দিন খানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ বিষয়ে জারি করা রুলের চূড়ান্ত শেষে এই রায় ঘোষণা করেন।

আদালত বলেছেন, ‘এই মামলায় রাবেয়া খাতুনকে আর আদালতে আসতে হবে না। একইসঙ্গে, এই মামলা সংশ্লিষ্ট ঢাকার অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ ও বিশেষ ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক মো. আল মামুন ও এপিপিকে সর্তক করে দিয়েছেন হাইকোর্ট।’ সবাই মিলে বিচার বিভাগকে রক্ষা করতে হবে বলেও মন্তব্য করেছেন আদালত।

আদালতে আজ আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী আশরাফুল আলম নোবেল। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল হারুন অর রশীদ ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল শাহীন মৃধা।

এ বিষয়ে আশরাফুল আলম নোবেল সাংবাদিকদের জানান, ২০০২ সালে তার নামে এজাহার হয় এবং তাকে গ্রেফতার করা হয়। দীর্ঘদিন যাবত মামলাটি জজকোর্টে চলছিল, নিষ্পত্তি হচ্ছিল না। ওই বৃদ্ধার ভাষ্যমতে তার বয়স ১০৪ বছর। এটা পত্রিকায় দেখে হাইকোর্টে আবেদন করি। আদালত ২৯ এপ্রিল রুল জারি করেন এবং মামলার কার্যক্রম স্থগিত করেন। গত ১৫ অক্টোবর মামলাটির ফাইনাল শুনানি হয়। আদালত রায়ে রুল যথাযথ ঘোষণা করে রাবেয়া খাতুনের ক্ষেত্রে মামলাটি কোয়াশড (বাতিল) করেছেন। অর্থাৎ রাবেয়া খাতুন এই মামলায় আর কোর্টে যেতে হবে না।

‘তার ক্ষেত্রে মামলাটি নিষ্পত্তি হয়ে গেলো। অ্যাবিউজ অব দ্য প্রসেস অব কোর্ট প্রমাণিত হয়েছে। যে প্রসেসে বিচার কার্যক্রম চলবে সেটি নানা কারণে ব্যাহত হয়েছে। এ কারণগুলো কোর্টে তুলে ধরেছি। কারণ হচ্ছে দীর্ঘদিন সাক্ষী আসে না। ২০০৩ সালে চার্জ ফ্রেম হয়েছে। ২০০৬ সালে মাত্র তিনজন সাক্ষী হন। এরপর দীর্ঘ ৮ বছর কোনো সাক্ষী নেই। কিন্তু প্রতি তারিখে এই বৃদ্ধকে কোর্টে হাজির থাকতে হতো।’

তিনি আরও বলেন, পরে ২০১৪ সালে আরও তিনজন সাক্ষ্য দিল। এ পর্যন্ত আর কোনো সাক্ষী নেই। এত বছর কেন ডিলেই হলো এর বক্তব্য রাষ্ট্রপক্ষ দিতে পারেনি। যৌক্তিক কারণ দেখাতে পারেনি।

অবৈধ অস্ত্র ও গুলিসহ তেজগাঁও থানার গার্ডেন রোডের একটি বাসা থেকে রাবেয়া খাতুনকে ২০০২ সালের ২ জুন গ্রেফতার করে পুলিশ। সেদিনই তার বিরুদ্ধে মামলা হয়। এ মামলায় জুলহাস ও অপর এক ব্যক্তি মাসুদকে আসামি করা হয়। পরদিন তাকে আদালতে হাজির করে কারাগারে পাঠানো হয়। এর প্রায় ছয়মাস পর তিনি জামিনে মুক্তি পান।

একই বছরের ১৯ সেপ্টেম্বর রাবেয়া খাতুন ও জুলহাসের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। তবে ২০০৩ সালের ২৪ মার্চ অভিযোগ গঠন করা হয়। এরপর এ মামলায় ছয়জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়। মামলার বিচার দীর্ঘ ১৬ বছরেও সম্পন্ন না হওয়ায় এ নিয়ে গত ২৫ এপ্রিল একটি জাতীয় দৈনিকে ‘অশীতিপর রাবেয়া: আদালতের বারান্দায় আর কত ঘুরবেন তিনি’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এই প্রতিবেদন যুক্ত করে হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. আশরাফুল আলম নোবেল।

ওই আবেদনের পর এই রিট আবেদনের ওপর শুনানির সময় আসামি জুলহাস মিয়া বেঁচে আছেন নাকি মারা গেছেন সেই বিষয়ে প্রতিবেদন দিতে পুলিশকে নির্দেশ দেন। এরপর ভোলার পুলিশ সুপার, ঢাকার বিশেষ ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারকসহ সংশ্লিষ্টদের তলব করেছেন। পরে ১৫ অক্টোবর শুনানি শেষে রায়ের জন্য ৩০ অক্টোবর দিন ঠিক করেছিলেন হাইকোর্ট। আজ রায় ঘোষণা করা হলো।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877